বন্ধুত্ব যখন চায়ের দোকানে!

লিখেছেন লিখেছেন আওণ রাহ'বার ১৮ এপ্রিল, ২০১৫, ১০:১৪:১১ রাত
ছোট বেলার বন্ধু নাম রুবেল। আমরা মজা করে ওকে উপনাম বাঙাল বলতাম। আর আমার তো ছোটমিয়া টাইটেল সবসময়ই আছে!
মামুন ওতো পিঠাপিঠি বন্ধু কতদিন ওর বাসায় গিয়েছি! কতবেলা যে খেয়েছি! তারতো কোন হিসেবই নেই। আমরা তিনজনই চটপটে।
রুবেল আর মামুন আমার ক্লাসমেট। দীর্ঘদিন আমাদের পথচলা এবং সময়ের স্রোতে হারিয়ে যাওয়া একেক জন একেক দিকে!
সময়ের টানে তিনজনারই দেখা হলো আবার একসাথে।
শোয়েব কে দেখলাম হঠাৎ! শোয়েবকে নিয়ে কিছু বলি, খুবই নাজুক প্রকৃতির একটি ছেলে। আমার সাথে শোয়েবের সম্পর্ক হায় হ্যালো মানে দুর থেকে ভালো একটা সম্পর্ক, কেমন আছো কি করো? কই যাও?এমন।
কথার ফাঁকে আসলো খাওয়া দাওয়ার পালা কই যাই?
আমাদের গন্তব্য আর কোথায় সেই চায়ের দোকান!
শেয়েবকে নিয়ে বসলাম দোকানে রুবেল আর মামুন দুজনে বিল দেবে আর আমরা চা খাবো সেটা ঠিক হলো।
বন্ধুত্বের একটা ব্যাপার এমনও থাকে যে চা কে কাড়াকাড়ি করে খেতে পারে!? বা এমনও হতে পারে যে দশ/পনের টাকার চা নিয়ে বিন্দু বিন্দু মেপে তিনজনে শেষ করা!
পাঠক নিশ্চই এমন অনুভূতি সবার জীবনেই থাকে কম বা বেশি! আমি একশ কাপ চায়ের পরিবর্তে হলেও সেই চা তিনজনে মিলে খেতে চাই এখনও এবং সবসময়। সত্যিই বন্ধুত্বের এই মুহুর্ত গুলো খুবই ভালোলাগা আর ভালোবাসার।
আমার পকেটতো ছিলো মরুভূমি!
কারন ঘড় থেকে টাকা ছাড়াই বের হয়েছি। আর ওদের সাথেও দেখা হলো। যাক ওদের মাথায় হাড়ি ভেঙে আজতো একটা চম্পট হবে।
ওরা আমাকে আর শোয়েবকে চা খাওয়ানোর জন্য বসিয়ে দিলো।
আমিও চটপট এ সুযোগ কি হাতছাড়া করা যায়? সাথেতো বিস্কিট চাইই চাই! বিস্কিট ছাড়া কি চা চলে?!
ওই দুটা আমাদের চা খাওয়া দেখছে আর মিটিমিটি হাসছে।
আমরাও চলেছি খেয়ে হঠাৎ ওরা দুটা হাওয়া গেলো! বিল কিভাবে দিবো এ চিন্তা করছি কারন পকেটতো গড়ের মাঠ! যাক খাওয়ার সময় এতই বা চিন্তা কিসের?
ও দুটা আবার আসলো আর দাম দেয়ার অনাগ্রহ প্রকাশ করলো আর উচ্চস্বরে হো হো হো! মনে হলো বিশ্বজয় হয়ে গেছে, স্বাধীন করছে কোন ভূমি! হো হো হো যে আজকে সেরকম জব্দ করেছে আমায়।
বদের হাড্ডিগুলা আমার দিকে তাকায় আর হাসে দোকানির দিকেও তাকায়।
চা শেষ বিল দেয়ার পালা ওরাতো আনন্দে সেই রকম ভাবে আছে।
আমি উঠলাম আর দোকানিকে বললাম ভাইয়া বিলটা পরে দিয়ো যাবোক্ষণ। দোকানিও মুচকি হাসি(আমি ওদের চায়ের দাওয়াত শুনেই পকেটের দিক লক্ষ্য রেখে এমন দোকানে এসেছি যারা আমাকে বাকি দিলেও গর্বিত হবে) তখন আমারো সেরকম হাসি ওই বদের হাড্ডিদুইটা সাথে সাথে কুপোকাত! আর আমারো হাসি মু হা হা হা হা কেমন জব্দ হলে।
তখন মামুন এসে বলে দেখ দেখ, কেমন ছেচরারে একটু চা খেয়ে বিলটাও বাকি রাখে!
আর অমনি মানিব্যাগ বের করে কচকচে বিল দিয়ে দিলো।
আর আমি তখন বিশ্বজয়ে নিঃস্ব কবি।
[স্মৃতির ডায়রী থেকে, কিছু ভুলও হতে পারে কারন এক্সাক্ট মনে নেই]।
কিছু কিছু সময় ভালোলাগা আর ভালোবাসায়। ছোটছোট খুঁনসুটিগুলো জীবনকে পূর্ণতায় ভরিয়ে দেয়। সত্যিই একটি আবেগি শব্দলাইন "চা স্টলের আড্ডাটা আবারো চাই আমি "।
তখন আমাদের বন্ধুত্ব আল্লাহর জন্য ছিলোনা কেননা আমরা তখন বুঝতামনা বা আমাদের জ্ঞানেও ছিলোনা আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব কাকে বলে?! ইশশ ওদের যদি এখন পাই তবে মহান রবের জন্য একটুতো বন্ধুত্ব করি তোদের সাথে; আয় তোরা আয়।
হা তবে যে বন্ধুত্ব এক আল্লাহর জন্য হবে একে অপরকে আল্লাহর জন্য মুহাব্বাত করবে ইনশাআল্লাহ সেই বন্ধুত্ব নাজাতের উসিলা হয়ে যাবে।
কবুল করো ইয়া রব্ব আমিন |
উৎসর্গ: খাম্মুনি সন্ধাতারা যার উৎসাহে লিখার প্রয়াস ।
আল্লাহ খাম্মুনিকে নেক হায়াত দান করুন আমিন।
বিষয়: বিবিধ
১৮৪৩ বার পঠিত, ৯৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
What about u?
এই যে তোমার জন্য কফি নাও খাও নাও খাও
সে কফি জুড়ে আছে আমার ছেলের হৃদয়টা কী অসাধারণ ব্যাপার
অনেক অনেক লাভ ইউ খাম্মুণি।
JAJAKALLAHU KHAIRAN.
Credits for you because either you I am unable to start writing because it's very hard.
JAJAKALLAH Again.
But you didn't it....
If the criticism not present how the writing will grow up??
Ha ha ha ha ha special thanks Jajakallah Khammuni..
I will continue In Sha ALLAH.
Pleas do accept ya ROBBY. Amin
I delighted on your comments.
JAJAKALLAH
পড়ার আগ পর্যন্ত কোন কথা নাই।
বদমাইশ শব্দটা ব্যবহার করে আসল বদমাইশদের আপনি সম্মানিত করলেন..... বদমাইশ শব্দটি বন্ধুত্বের ছন্দে অপমানজনক!!!!
যাই হোক এটা আপনার ব্যাপার..... সৃতিময় লেখাটি অন্তর ছুয়ে গেল! অনেক সৃতি মনে পড়ে গেলো।
হারিকেনের মন্তব্য গুলো দেখে পাঠক হিসেবে আমি বিরক্ত হয়েছি! যদিও আমরা হারিকেন ছাড়া চলতে পারিনা!!!
সন্ধ্যাতারা মেয়ে ব্লগারিনী হিসেবে লিখার তেজ কিন্তু আগুনের মত।
ধন্যবাদ শুভব্লগিং......!
আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
সত্যিই এমন গঠণমূলক মন্তব্য লেখার মান বাড়িয়ে দেয় এবং লেখককে বারবার লেখার জন্য উৎসাহিত করে।
জ্বী সন্ধাতারা খাম্মুনি আর ভাপ্পুনি উভয়ের জন্য খুব খুব দোয়া এবং শুভকামনা রইলো।
আন্তরিক শুকরিয়া জাজাকাল্লাহ।
যারা আমার দুষ্টুমিগুলো সহ্য করে আমি শুধু উনাদের ব্লগেই এরকম মন্তব্য করি। @নুর আয়শা আব্দুর রহিম ভাই/ভাবি
খেটে দিচ্ছেন ধন্যবাদ ব্লগে নিয়মিত আসবেন এটাই প্রত্যাশা.....@লেখক
মিস ইয়ু লাভ ইউ হারিকাপু.।
তারপড়ও তুমিই আমার ছোটবোন।
অনেক ধন্যবাদ।
সেটা দিয়েই সাইজ করা হবে
জীবনে ফেলে এই সব টুকরো টুকরো স্মৃতি গুলো নষ্টালজিক সুন্দর অনুভূতি!
মনে পড়ে পড়ে যায় বারে বার!
আপনার খালামনি মানে শ্রদ্ধেয়া আপুজ্বীর জন্যে সব সময়ই অন্তর থেকে 'হায়াতে তাইয়েবা'র দোয়া করি!!
এরকম ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভালোলাগা আর ভালোবাসার ছোট ছোট স্মৃতিগুলোই তো জীবনের পূর্ণতা।
জাজাকাল্লাহ ইয়া আখিউল কাবির ।
জাজাকাল্লাহু খাইরান ফিদ্দুনিয়া ওয়া ফী আখিরাহ।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
তানিন ভাইয়ার বিয়েতে যেকোন ধরনের ফটো, ভিডিও নিষেধ ছিলো বুঝলা তাই আমিও কোন খাওয়া দাওয়ার ছবি তুলিনি।
খুব সুন্দর এবং হৃদয়ে স্টিকি করা একটা বিয়ে।
তুমি কি তাহলে ঝাঁড়-ফোঁখ এর কাজকর্মও চালাও নাকি .... হুজুর?
তবে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো হয় বইয়ের সাথে।
আর আমার হাড় দিয়ে যে তৈরি হয়েছে সেইতো আমার তাকদ্বীরে হবেরে বৎস
কিছু বন্ধুত্ব অমলিন, সময়ের সাথে অনেক বন্ধুরাই দূরে চলে যায় কিন্তু স্মৃতি রেখে যায়!
শৈশবের স্কুলের বা খেলার বন্ধুত্ব আর এখনকার বড় হয়ে গড়ে ওঠা বন্ধুত্ব অনেক আলাদা! এখন তো দ্বীনদার বন্ধুত্ব খুঁজি আমরা আলহামদুলিল্লাহ !
আমার এখন টং এর দোকানের চা খেতে ইচ্ছে করছে
শুকরিয়া ভাই!
ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ আপু।
এখন তো দ্বীনদার বন্ধুত্ব খুঁজি আমরা আলহামদুলিল্লাহ !
রং চা না কনডেন্স মিল্ক চা নাকি গরুর দুধ এর চা নাকি কফি মিক্সিং চা নাকি মালটোভা চা নাকি লেবু আদা কমলা চা নাকি গ্রিন চা??
নাকি গরম করা চা কোন চাটা খেতে মনে চাচ্ছে আপু??
অনেক ধন্যবাদ আপু জাজাকাল্লাহ
অনেক শুকরিয়া
নিয়মিত লিখবে যা লিখার হাতকে করবে শাণিত, চিন্তাকে করবে পরিশোধিত আর ভাবনাগুলো হবে মুক্তোর মত ঝকঝকে।
আমার শক্তি নেই এমন মন্তব্যের জবাব দেয়ার মত।
আমার খাম্মুনির জন্য অন্তরের অন্ত:স্তল থেকে অনেক অনেক শুকরিয়া জাজাকাল্লাহ।
মাছটা নিজে খেয়ে কাটাতা বন্ধুর জন্য রেখে দেয়াকে বন্ধুত্ব কয়
এই শর্তে আমার বন্ধু হতে রাজী আছেন তো
জাজাকাল্লাহ আপু খুব সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
এই টুকরো স্মৃতিগুলো জীবনের স্বর্ণমূহুর্ত মনে হয়।
আগামী থেকে আমার ব্লগে আপনাকে মন্তব্য করতেই হবে কিন্তু দাওয়াত রইলো অগ্রীম জাজাকাল্লাহ।
যায়গাতো ধু ধু মরুভূমি কারন এখানেতো ফসল নেই বাগান নেই মানে লেখা নেই।
লিখতেতো পারিনা ইশশ আপনার লেখার মত এক কানা কড়িও যদি লিখতে পারতাম?
অনেক ধন্যবাদ প্রেরনার সাথী হওয়ার জন্য।
জাজাকাল্লাহু খাইরান।
মন্তব্য করতে লগইন করুন